আফগানিস্তান ক্রিকেট দল নিষিদ্ধের চিঠি পেয়েছে

স্পোর্টস ডেস্ক

২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে নারীদের ক্রিকেট কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়, যা বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) এবং দেশের সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংস্থাগুলি দীর্ঘদিন ধরেই আইসিসির কাছে নারীদের ক্রিকেট নিয়ে অভিযোগ করে আসছিল।

নারীদের ক্রিকেট নিষিদ্ধ করায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ বাতিল করেছিল অস্ট্রেলিয়া। সদ্য শেষ হওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সময় ১৬০ জন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)-কে আফগানিস্তান ম্যাচ বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এবার, আফগানিস্তানের ক্রিকেট নিষিদ্ধ করতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) আইসিসিকে চিঠি পাঠিয়েছে।

স্কাই স্পোর্টসের রিপোর্ট অনুযায়ী, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আইসিসির কাছে আবেদন জানিয়েছে, যাতে তারা আফগানিস্তানের নারী ক্রিকেটারদের সমর্থন করে এবং তালেবানের পক্ষ না নেয়। ৭ মার্চ আইসিসির কাছে পাঠানো চিঠিতে সংস্থাটি তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার হ্রাসের প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তানকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে আহ্বান জানাচ্ছি যে, যতক্ষণ না আফগানিস্তানে নারীরা শিক্ষা এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, ততক্ষণ তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানকে আইসিসি সদস্যপদ থেকে স্থগিত করা হোক এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা হোক।”

এইচআরডাব্লিউ আরও দাবি করেছে যে, তালেবান শাসনের কারণে আফগানিস্তানে নারীদের খেলাধুলা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে আফগানিস্তান নারী ক্রিকেট দলের বেশিরভাগ সদস্য অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাসিত অবস্থায় আছেন, যার ফলে আফগানিস্তান সরাসরি আইসিসির সদস্যপদ শর্ত লঙ্ঘন করছে, কারণ তাদের পুরুষ দল এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিচ্ছে এবং সম্প্রতি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও খেলেছে।

এইচআরডাব্লিউয়ের গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ডিরেক্টর মিঙ্কি ওয়ার্ডেন আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহকে চিঠি লিখে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “নারীরা খেলাধুলা থেকে বাদ পড়েছে, কিন্তু তাদেরকে আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পরামর্শের মূলনীতি হল অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরামর্শ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পৃক্ত করা।” তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ইতিমধ্যে মানবাধিকার কাঠামো গ্রহণ করেছে এবং জাতিসংঘের ‘ব্যবসা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত নির্দেশনা’ অনুসরণ করছে।

ওয়ার্ডেন আইসিসিকে মনে করিয়ে দেন, “যদি আফগানিস্তানকে ক্রিকেট নিষিদ্ধ না করা হয়, তাহলে অলিম্পিকে হয়তো ক্রিকেট ডিসিপ্লিনই থাকবে না।” তিনি আইসিসির কাছে আহ্বান জানান যে, তারা জাতিসংঘের বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নির্দেশিকার ভিত্তিতে একটি মানবাধিকার নীতি প্রণয়ন করুক।

You may also like