আফগানিস্তানের ক্রিকেট নিষিদ্ধে চাপ ক্রমেই বাড়ছে

স্পোর্টস ডেস্ক

বিগত কয়েক বছর ধরে আফগানিস্তান ক্রিকেট নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা আইসিসির কাছে একাধিক অভিযোগ জানিয়েছে। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এর মূল কারণ ছিল আফগানিস্তানে নারী ক্রিকেট দলের খেলার সুযোগ না থাকা। তবে এসব অভিযোগ এবং আহ্বানকে পাশ কাটিয়ে আফগানিস্তান তাদের ক্রিকেট কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।

এবার, আরও কঠোর সুরে আফগানিস্তান ইস্যুতে আইসিসির কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার লঙ্ঘনের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) কাছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সদস্যপদ স্থগিত করার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ (HRW)। সংস্থাটি আইসিসিকে অনুরোধ করেছে, আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিরত রাখা হোক, যতদিন না নারীদের শিক্ষা এবং খেলাধুলার সুযোগ প্রদান করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “আমরা আইসিসিকে আহ্বান জানাচ্ছি, যতদিন না আফগানিস্তানে নারীরা শিক্ষা এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, ততদিন তালেবান শাসিত আফগানিস্তানকে আইসিসির সদস্যপদ থেকে স্থগিত করা হোক এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা হোক।”

চিঠিতে আরও বলা হয়, “আইসিসি যেন জাতিসংঘের ‘বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ নির্দেশিকা অনুসরণ করে একটি মানবাধিকার নীতি প্রণয়ন করুক।”

এ চিঠিটি ৭ মার্চ আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহকে পাঠানো হয়েছে এবং এটি দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের ঠিক আগের দিন পাঠানো হয়। চিঠিতে একটি বড় হুমকিও দেওয়া হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভের পরিচালক মিঙ্কি ওয়ার্ডেন আইসিসি চেয়ারম্যানকে মনে করিয়ে দেন যে, ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, এবং তালেবান সরকারের নারীদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা অলিম্পিক চার্টারের লঙ্ঘন।

ওয়ার্ডেন বলেন, “তালেবান নারীদের খেলাধুলা থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত করেছে, যা অলিম্পিকের নীতির পরিপন্থি। এই অবস্থায় আমরা আশা করি আইসিসি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৯১ সালে তালেবান শাসনামলে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি আফগানিস্তানকে নিষিদ্ধ করেছিল। এখন, আইসিসি কেন তাদের নিষিদ্ধ করতে পারে না? আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, টেস্ট মর্যাদা পেতে হলে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ক্রিকেটও পরিচালিত হতে হবে।

তবে, এসব চাপ এবং প্রতিবাদ উপেক্ষা করেই আফগানিস্তান ক্রিকেট তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও তালেবান শাসনের অধীনে নারী সমাজের জন্য খেলাধুলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

You may also like