শিলংয়ের বৈরী আবহাওয়া ও ভেন্যু সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের মধ্যেও রোববার বিকেলে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে দেখা গেল ভিন্ন এক চিত্র। জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের কৃত্রিম টার্ফে দলের অনুশীলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন হামজা দেওয়ান চৌধুরী। ব্রিটিশ প্রবাসী এই ফুটবলার অল্প সময়েই সতীর্থদের আপন করে নিয়েছেন। জামাল ভূঁইয়া ও তারিক রায়হান কাজীর সঙ্গে গড়ে তুলেছেন দারুণ বন্ধন, যা মাঠে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সেই বোঝাপড়াকে কাজে লাগিয়ে ভারতের বিপক্ষে শক্তিশালী রক্ষণ গড়তে চান তপু বর্মণ। ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে রক্ষণভাগে হামজার সঙ্গে তাঁর জুটি দেখার অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা।
হামজা লেস্টার সিটির হয়ে মূলত ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন, শেফিল্ড ইউনাইটেডেও ছিলেন একই ভূমিকায়। তবে ভারতের বিপক্ষে লাল-সবুজের জার্সিতে তাঁর ভূমিকা কী হবে, সেটি এখনও চূড়ান্ত করেননি কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের বিপক্ষে গোল হজম এড়াতে হামজাকে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলানোর সম্ভাবনা বেশি। পাশাপাশি রক্ষণকে আরও শক্তিশালী করতে তাঁর পেছনে তপু বর্মণকে খেলানোর পরিকল্পনাও থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশ যদি লিড নেয়, তাহলে দুজনকেই এক সারিতে রক্ষণে দেখা যেতে পারে। অনুশীলনেও তেমন ইঙ্গিত মিলেছে।
হামজার সঙ্গে জুটি বাঁধতে মুখিয়ে আছেন তপু বর্মণ। তিনি বলেন, “অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের ভালো বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে, যা মাঠের পারফরম্যান্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই সমন্বয় ধরে রাখতে পারি, তাহলে আমরা ভালো ফল অর্জন করতে পারব।”
শুধু ফুটবল নয়, মাঠের বাইরেও হামজার সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বলে জানান বসুন্ধরা কিংসের এই ডিফেন্ডার। “হামজা আমাদের সবাইকে আপন করে নিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে শেখার অনেক কিছু আছে—বিশেষ করে কীভাবে নিজের খেলায় উন্নতি করা যায়। আমরা শুধু ফুটবল নয়, ব্যক্তিগত জীবন, ইংল্যান্ডের সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাস নিয়েও কথা বলি,” বলেন তপু।
তবে ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে তাদের সেটপিস থেকে গোল করার সক্ষমতা। মালদ্বীপের বিপক্ষে ভারতের করা গোলগুলোর ভিডিও দেখে সেটপিস ঠেকানোর কৌশল নিয়ে কাজ করছেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার। “সেটপিস নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন কাজ করেছি। ভারতের শেষ ম্যাচেও তারা সেটপিস থেকে গোল করেছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, যেন সেটপিস থেকে কোনোভাবেই গোল হজম না করি,” বলেন তপু।
হামজা-তপু রসায়ন কতটা কার্যকর হয়, সেটি দেখার অপেক্ষায় সবাই।