সকালে মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একে একে হাজির হতে থাকেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ছুটির দিনে মাঠে খেলা না থাকলেও ক্রিকেট পাড়ায় ছিল এক ধরনের উত্তাপ। প্রিমিয়ার লিগের ব্যস্ত সূচির মাঝেও একসঙ্গে এতজন ক্রিকেটারের উপস্থিতি ঘিরে গুঞ্জন ছড়ায়। ক্রিকেটারদের নিজেদের মধ্যে এক দফা আলোচনার পর শেষ দিকে বৈঠকে যোগ দেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদও।
এই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ডিপিএলে খেলার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এটাই ছিল গণমাধ্যমের সামনে তার প্রথম উপস্থিতি। এদিন তিনি বিসিবির কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলেন।
বিশেষ করে তরুণ ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে গঠিত ঘটনাগুলো নিয়ে তামিমের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট ও তীব্র। মাঠে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকতের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে হৃদয় প্রথমে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান। এরপর সেই শাস্তি এক ম্যাচে নামিয়ে আনা হয়। পরে আবারো এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে ‘হাস্যকর’ বলে আখ্যা দেন তামিম।
তিনি বলেন, “আমরা এখানে এসেছি কিছু ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে। গত দুই-তিন মাসে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে অনেক খেলোয়াড়ই হতাশ। প্রথমেই বলতে চাই হৃদয়ের ঘটনায়। মাঠে তার সঙ্গে একটা কিছু হয়েছে। তাকে প্রথমে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হলো। তখন আমরা কেউ কোনো মন্তব্য করিনি। এরপর হঠাৎ দেখলাম শাস্তি কমে এক ম্যাচ হলো। সেটাও মানলাম। কিন্তু গতকাল আবার তাকে নিষিদ্ধ করা হলো। কোন নিয়মে, কীভাবে—আমরা কিছুই জানি না। এটা খুবই হাস্যকর। এমন সিদ্ধান্ত শাস্তি হতে পারে না।”
তামিম আরও অভিযোগ করেন, ডিপিএলে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ উঠলেও অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা তো দূরের কথা, উল্টো বোর্ড তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেই ক্ষান্ত হয়েছে। একইভাবে বিপিএলে ফিক্সিং সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়েও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি বিসিবি।
সবশেষে তামিম বলেন, “খেলোয়াড়দের সম্মান, নিরাপত্তা, আর ন্যায়বিচার—এই তিনটা জিনিসের কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। আমরা চাই বোর্ড আমাদের কথা শুনুক, এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিক।”
তামিমের এই খোলামেলা বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বোর্ড ও ক্রিকেটারদের মধ্যে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষায় এখন প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ।