কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামের আকাশে ম্যাচের আগে উড়ছিল একটি হেলিকপ্টার যার পেছনে ঝুলছিল ব্যানার—লেস্টার মালিকপক্ষের প্রতি ক্ষোভের বার্তা। লিভারপুলের বিপক্ষে মাঠে নামার ঠিক আগেই এমন উত্তেজনাপূর্ণ দৃশ্য দেখা যায়। মাঠের লড়াইয়েও লিগ শীর্ষে থাকা দলটিকে বেশ কষ্টে রেখেছিল লেস্টার সিটি। তবে শেষ পর্যন্ত ৭৬ মিনিটে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের গোলে হারের স্বাদ নিতে হয় তাদের।
এই হারই লেস্টারের জন্য প্রিমিয়ার লিগ অধ্যায়ের ইতি টানে। নিশ্চিত হয়ে যায়, আগামী মৌসুমে তারা খেলবে না ইংলিশ ফুটবলের শীর্ষসারিতে।
বাংলাদেশি ফুটবলভক্তদের জন্যও এটি একটি হতাশার খবর। কারণ বাংলাদেশ ফুটবলের পরিচিত মুখ হামজা চৌধুরী মূলত লেস্টার সিটির খেলোয়াড়। যদিও বর্তমানে তিনি ধারে খেলছেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে, যাদের অবস্থান চ্যাম্পিয়নশিপে।
ধারের মেয়াদ শেষে হামজাকে হয়তো ফিরতে হবে লেস্টার সিটিতেই। সে ক্ষেত্রে আগামী মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ হারাবেন তিনি। তবে একমাত্র ব্যতিক্রম হতে পারে যদি শেফিল্ড ইউনাইটেড প্রমোশন পায় এবং ক্লাবটি হামজার সঙ্গে স্থায়ী চুক্তি করে।
অবনমনের হতাশা যেন যথেষ্ট ছিল না—তার সঙ্গেই যুক্ত হলো এক নতুন লজ্জার রেকর্ডও। ঘরের মাঠে হেরে প্রিমিয়ার লিগ থেকে বিদায় নেওয়ার দিন লেস্টার সিটি গড়েছে এক বিব্রতকর ইতিহাস।
প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা ৯টি হোম ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে ‘দ্য ফক্সেস’। শুধু প্রিমিয়ার লিগ নয়, ইংলিশ ফুটবলের শীর্ষ স্তরে আগে কোনো দলকেই এমন বিব্রতকর পরিণতির শিকার হতে হয়নি।
প্রিমিয়ার লিগে সরাসরি ফেরার রাস্তা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে হামজা চৌধুরীর বর্তমান ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডের জন্য। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান পয়েন্ট তালিকায় তারা রয়েছে তিন নম্বরে। ৪৩ ম্যাচ শেষে শেফিল্ডের পয়েন্ট ৮৬, শীর্ষ দুই দল লিডস ইউনাইটেড ও বার্নলির পয়েন্ট ৯১ করে।
চ্যাম্পিয়নশিপে মৌসুমের আর মাত্র ৩ ম্যাচ বাকি। এমন পরিস্থিতিতে শেফিল্ডের জন্য সরাসরি প্রমোশনের রাস্তা এখন অনেকটাই কঠিন। শেষ তিন ম্যাচে জয় ছাড়া বিকল্প নেই তাদের সামনে। পাশাপাশি তাকিয়ে থাকতে হবে লিডস ও বার্নলির বাকি ম্যাচগুলোর দিকেও।
এ অবস্থায় আজ রাতে শেফিল্ড মাঠে নামছে এক মহাগুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে—দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্নলির বিপক্ষে। এই ম্যাচে যদি শেফিল্ড জয় পায় তাহলে পয়েন্ট ব্যবধান দাঁড়াবে মাত্র দুইয়ে। সেক্ষেত্রে বার্নলি যদি শেষ দুই ম্যাচের একটিতে পয়েন্ট হারায় (ড্র করলেও), তাহলে শেফিল্ডের সামনে খুলে যেতে পারে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে ফেরার দরজা।
তবে সেখানে একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে গোল ব্যবধানের হিসাব। তাই শুধু জয় নয় বড় ব্যবধানেও নজর থাকবে শেফিল্ড ইউনাইটেডের।
ইউএ / টিডিএস