ক্রীড়াঙ্গনের সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সার্চ কমিটিকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে দেশের সব ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রস্তাব জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে প্রায় এক মাস আগে সময় বাড়ানোর আবেদন জানালেও সে বিষয়ে কোনো সাড়া পায়নি সার্চ কমিটি। অবশেষে শনিবার ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়েছেন, সার্চ কমিটিকে সময় বাড়ানো হবে।
পল্টন ভলিবল স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপ ভলিবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। সার্চ কমিটির সময়সীমা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সার্চ কমিটির দায়িত্ব যত দ্রুত সম্ভব ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন পুনর্গঠন করা। তবে এটা খুব সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে, কারণ অতীতে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনেক জায়গায় অনিয়ম হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শ্যুটিং ফেডারেশনের কথাই বলি—জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ফেডারেশনের সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। তাই ফেডারেশনগুলোকে পুনর্গঠন করতে সময় লাগলেও সেটি গুরুত্ব দিয়েই করতে হবে।”
গত ২১ মার্চ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সার্চ কমিটির প্রধান মো. জোবায়েদুর রহমান রানাকে চিঠি দিয়ে ২০ এপ্রিলের মধ্যে বাকি সব ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের কমিটির প্রস্তাব দিতে বলেছিল। জবাবে সার্চ কমিটি মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করার পরিকল্পনার কথা জানালেও এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এতদিন আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
ভলিবল উদ্বোধনের দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সার্চ কমিটির আহ্বায়ক জোবায়েদুর রহমান রানা ও সদস্য মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদ এবং এম এম কায়সার।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট ক্রীড়াঙ্গনে সংস্কার আনতে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। তবে কমিটি গঠন নিয়েই শুরু থেকেই বিতর্ক দেখা দিলে, পরে ১ অক্টোবর এটি পুনর্গঠন করা হয়। বর্তমানে দেশে ৫৫টি ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন হয়ে গেছে গত বছরের ২৬ অক্টোবর এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে আংশিক পরিবর্তন হয়েছে। বাকি ৫৩টির মধ্যে ২৬টির নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে সার্চ কমিটি।
চলতি অর্থবছর প্রায় শেষ পর্যায়ে। সরকারের বরাদ্দ করা অর্থ সময়মতো ব্যবহার না করতে পারলে আগামী অর্থবছরে প্রয়োজনীয় বাজেট পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাই মন্ত্রণালয় চেয়েছিল ২০ এপ্রিলের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করতে। তবে মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং সার্চ কমিটির মধ্যে সমন্বয়হীনতা থাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্ভব হয়নি। এখন পরিস্থিতি বিবেচনায় সার্চ কমিটিকে অতিরিক্ত সময় দিতে চলেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।