একটার পর একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ চালু হওয়ায় যেমন নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ বাড়ছে, তেমনি সুযোগ নিচ্ছে অসাধু চক্রও। ম্যাচ গড়াপেটার মতো ঘটনাও বাড়ছে। তবে এমন কর্মকাণ্ড ঠেকাতে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ক্রিকেট বোর্ডগুলো তৈরি করেছে কঠোর আইন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের এমনই এক আইনে এবার নিষিদ্ধ হলেন মুম্বাই টি-২০ লিগের একটি দলের মালিক গুরমিত সিং ভামরাহ।
মুম্বাই টি-২০ লিগের সুপারসনিক ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক ছিলেন গুরমিত। ২০১৯ সালে লিগ চলাকালীন তিনি দুই ক্রিকেটার—ধাওয়াল কুলকার্নি ও ভাবিন ঠক্করকে ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দেন। পরে বিসিসিআইয়ের দুর্নীতি দমন ইউনিটের তদন্তে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপর বিসিসিআইয়ের ন্যায়পাল এবং ভারতের সাবেক বিচারপতি অরুণ মিশ্র তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরমিতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দেওয়া আদেশে নির্দিষ্ট মেয়াদ উল্লেখ না থাকলেও বিসিসিআইয়ের দুর্নীতিবিরোধী আইনে সাধারণত পাঁচ বছর বা আজীবন নিষেধাজ্ঞার বিধান রয়েছে। আদেশে আরও বলা হয় গুরমিতের হয়ে সোনু ভাসান নামের এক ব্যক্তি ভাবিন ঠক্করকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
আদেশনামায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব নিয়ে অভিযুক্ত গুরমিত সিং ভামরাহর পক্ষ থেকে যে কথোপকথন হয়েছে সেখানে সোনু ভাসান নামের একজন ভাবিন ঠাক্করকে অর্থের প্রস্তাব দেন। সেই কথোপকথনের আরেকটি অংশে স্পষ্টভাবে বলা হয় ঠাক্কর এই প্রস্তাব গ্রহণ করলে তিনি বিভিন্নভাবে উপকৃত হবেন। তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের মতে বিষয়টি খতিয়ে দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যায়—সোনু ভাসান আসলে গুরমিতের প্রতিনিধি হিসেবেই কাজ করেছেন। তিনি ঠাক্করকে আশ্বস্ত করেছিলেন তার যেকোনো চাহিদা পূরণ করা হবে।
তবে এখন আর গুরমিত সিং ভামরাহ মুম্বাই টি২০ লিগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে এই টুর্নামেন্ট স্থগিত রয়েছে। যদিও সেটি আবার শুরু করার পরিকল্পনা চলছে। ঘটনার সময় গুরমিতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ বিসিসিআইয়ের দুর্নীতি দমন ইউনিটের হাতে তুলে দেন দুই ক্রিকেটার—ধাওয়াল কুলকার্নি ও ভাবিন ঠাক্কর।
ধাওয়াল কুলকার্নি গত বছর মার্চে রঞ্জি ট্রফি শেষ করে সব ধরনের পেশাদার ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। ভারতের জাতীয় দলে তিনি খেলেছেন ১২টি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, যেখানে তার সংগ্রহ ২২টি আন্তর্জাতিক উইকেট। আইপিএলেও তার রয়েছে উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা—৯২টি ম্যাচ খেলে ৮৬টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। আইপিএলে তিনি খেলেছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস এবং গুজরাট লায়ন্সের হয়ে।
ইউএ / টিডিএস