প্রথম লেগে ৪-০ গোলের বড় জয় পুঁজি করে দ্বিতীয় লেগে কিছুটা নিশ্চিন্তভাবেই মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু জার্মানির সিগনাল ইদুনা পার্কে গিয়ে ডর্টমুন্ডের তোপে পড়তে হয়েছে কাতালানদের। দ্বিতীয় লেগে ৩-১ গোলে হারলেও দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলের অ্যাগ্রিগেটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা। ২০১৯ সালের পর ইউরোপের সেরা মঞ্চে আবার শেষ চারে ফিরল ক্লাবটি।
প্রথম লেগে ৪-০ ব্যবধানের জয় ডর্টমুন্ডের সামনে ‘মিরাকল’ ঘটানোর চ্যালেঞ্জই দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। সেই লক্ষ্যেই ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল তারা। ম্যাচের ১১ মিনিটে বার্সা গোলরক্ষক সেজনির ফাউলে পেনাল্টি পায় ডর্টমুন্ড, যেখান থেকে সেরহু গিরাসি গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। প্রথমার্ধে ৭টি শট নিয়েও আর কোনো গোল পায়নি তারা, বার্সার পক্ষেও ছিল না কোনো সাড়া।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ আরও রোমাঞ্চকর হয়। ৪৯তম মিনিটে আবারও গিরাসি, রামি বেনসেবাইনির পাস থেকে ডর্টমুন্ডের দ্বিতীয় গোলটি করেন। কিন্তু মাত্র চার মিনিট পরই সেই বেনসেবাইনি আত্মঘাতী গোল করে বসেন, বার্সাকে এনে দেন স্বস্তির নিঃশ্বাস। অ্যাগ্রিগেটে তখন বার্সা এগিয়ে ৫-২ গোলে।
৭৫তম মিনিটে ডর্টমুন্ড আবারও ব্যবধান কমায়। বার্সার ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউহোর ভুল পাস ধরে গিরাসি হ্যাটট্রিক পূর্ণ না করলেও নিজের তৃতীয় গোলটি করে স্কোরলাইন করেন ৩-১। এরপর হুলিয়ান ব্রান্ডট আরেকটি গোল করলেও সেটা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। অতিরিক্ত সময় শেষে জয় পেলেও ডর্টমুন্ড বিদায় নেয় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ২০১৫ সালের পর আর শিরোপা জেতা হয়নি বার্সার, ২০১৯-এর পর সেমিফাইনালেও ওঠেনি তারা। এরপর বহু অন্ধকার সময় পার করেছে ক্লাবটি—মেসির বিদায়, ৮-২ গোলের লজ্জার হার, আর্থিক দুর্দশা—সবকিছুর ছাপ যেন একটা সময় দলটিকে মাটিতে নামিয়ে এনেছিল।
তবে হান্সি ফ্লিকের অধীনে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বার্সেলোনা। লা মাসিয়ার তরুণদের ওপর আস্থা, অভিজ্ঞদের সঙ্গ, এবং নতুন কৌশলে ধীরে ধীরে ফিরছে সেই পুরোনো বার্সা। এই সেমিফাইনাল তাই শুধুই একটা সাফল্য নয়, বরং একটা বার্তা—বার্সেলোনা ফিরছে।
ইউএ / টিডিএস