বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সাকিব আল হাসান শুধু সাফল্যেই নয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবেও বরাবরই ছিলেন। মাঠে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পাশাপাশি মাঠের বাইরের নানা ঘটনায়ও বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি।
গত বছর জুলাই-আগস্টে যখন দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন জোরালো হচ্ছিল তখন সাকিব ছিলেন কানাডায়। পরিবার নিয়ে সাফারি পার্কে সময় কাটাচ্ছিলেন। সেই মুহূর্তে স্ত্রীর শেয়ার করা ঘুরতে যাওয়ার ছবিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন—জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে সাকিবের অনুপস্থিতি এবং তার নিরব ভূমিকা নিয়ে।
একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব সেই সময়কার পরিস্থিতি এবং নিজের আচরণ নিয়ে কথা বলেছেন খোলামেলা ভাবে। ছবিটি তিনি নিজে পোস্ট না করলেও দায় নিচ্ছেন পুরোপুরি। বলছেন, ‘এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক ভ্রমণ ছিল। এখন বুঝতে পারছি, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমার আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল।’
তিনি আরও বলেন, তখন তার মনোযোগ ছিল শুধুই ক্রিকেটে আমাকে কখনো রাজনীতিতে জড়াতে বলা হয়নি বরং সব সময় বলা হয়েছে ‘শুধু ক্রিকেট খেলো।’ আমি সেটাই করেছি।’
সেই ছবিটি যে এমন তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে তা বুঝে উঠতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সাকিব। অনেকে কষ্ট পেয়েছেন সেটিও স্বীকার করেছেন, ‘এখন বুঝতে পারছি ওটা একটা ভুল ছিল। এমনকি অন্যরাও একই রকম জিনিস পোস্ট করলেও আমারটা বেশি মনোযোগ পেয়েছে।’
কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ চলাকালে এক দর্শকের সঙ্গে সাকিবের বাগ্বিতণ্ডা নিয়েও দিয়েছেন ব্যাখ্যা। ওই দর্শক কেন তিনি কিছু করছেন না সে নিয়ে বারবার প্রশ্ন করলে সাকিবও পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘ভাই, আপনি কী করেছেন?” এখান থেকেই উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। সাকিবের ভাষায়, ‘আমি তো ওই সময়ের ঘটনাগুলো উপেক্ষা করছিলাম না। আমি শুধু জানতাম না কী করতে হবে কোনটা কার্যকর হবে।’
তিনি মনে করেন, ফাঁকা বুলি নয় বরং দায়িত্বশীল ভূমিকা জরুরি,’আমি যদি সরাসরি পরিবর্তন আনতে না পারি তাহলে ফাঁকা বুলি আওড়ে কী লাভ!’-এই ছিল সাকিবের বক্তব্য।
রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ক্রিকেট থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেছেন সাকিব আল হাসান। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। সবশেষ ঘরের মাঠে টেস্ট খেলেননি, খেলেননি পাকিস্তান ও দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও।
তার মাঠে ফেরার বিষয়টি এখনো ঘিরে আছে অনিশ্চয়তায়—তিনি কবে ফিরবেন, আদৌ ফিরবেন কি না সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
ইউএ / টিডিএস