গোড়ালির হাড় বৃদ্ধিজনিত সমস্যায় ভুগছেন তাসকিন

স্পোর্টস ডেস্ক

কাঁধের চোটের চিকিৎসা নিয়েই তিন সংস্করণে খেলে যাচ্ছিলেন তাসকিন আহমেদ। বর্তমানে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন এই পেস বোলার। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে দেশের সেরা পেস বোলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার খেলার পুরস্কারও এসেছে, বর্তমানে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ‘এ’ প্লাস ক্যাটেগরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তিনি।

তবে ৩০ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলারের স্বপ্ন যখন আকাশছোঁয়া, তখন নতুন একটি উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে বাঁ-পায়ের গোড়ালির হাড়ের বৃদ্ধি নিয়ে। বেশিরভাগ সময়ই তাসকিনকে ব্যথা নিয়ে ম্যাচ খেলতে হয় এবং সমস্যা গুরুতর হওয়ার কারণে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ বিকল্প ব্যবস্থা ভাবছে। গতকাল তাঁর গোড়ালির সমস্যার গভীরতা নির্ণয়ের জন্য এমআরআই করা হয়েছে।

ফিজিশিয়ানরা বলেন, পেস বোলারদের ল্যান্ডিং পায়ের গোড়ালির হাড়ের বৃদ্ধি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বিশেষ করে একিলিস টেন্ডনের নিচের দিকে এই হাড় বেড়ে থাকে।

বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, “বছরের পর বছর বোলিং করার কারণে পেস বোলারদের গোড়ালির হাড় বাড়তে পারে, যা সাধারণত ঘটে। তাসকিনের ক্ষেত্রে যে ব্যথা হচ্ছে, তা একেবারেই ব্যতিক্রম। ম্যাচ খেললে তার ব্যথা হয়, কিন্তু বিশ্রামে থাকলে ব্যথা থাকে না। আমরা আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে হাড় বৃদ্ধির অবস্থান দেখেছি এবং এমআরআই করা হয়েছে যাতে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া গেলে বিশেষজ্ঞদের কাছে রিপোর্ট পাঠানো যায়।”

তিনি আরও জানান, গোড়ালির হাড়ে অস্ত্রোপচার একটি জটিল প্রক্রিয়া। দেশে এখন পর্যন্ত এমন কোনো ক্রীড়াবিদের গোড়ালির হাড়ের সমস্যা সমাধানে অস্ত্রোপচার করা হয়নি।

তাসকিন গত তিন মাস ধরে বাঁ-পায়ের গোড়ালির ব্যথার কথা বিসিবির চিকিৎসকদের জানান এবং চিকিৎসকরা হাড় বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর চোটের চিকিৎসা এবং ‘ওয়ার্ক লোড’ নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলার পরামর্শ দেওয়া হয়। জাতীয় দলের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম খান তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া তদারকি করেন।

এ বিষয়ে দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, “তাসকিনের জন্য আগে থেকেই একটি প্রোগ্রাম দেওয়া ছিল। এজন্য তিনি ঢাকা লিগে তিনটি ম্যাচ খেলেছেন, তবে ঈদের পর তিনি আর কোনো ম্যাচ খেলেননি। বিশ্রামে থাকার মাধ্যমে ব্যথামুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছেন। মূলত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলতে তাঁর জন্য লিগে কম খেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। টেস্ট খেলার ক্ষেত্রেও তাকে বেছে বেছে খেলানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

গতকাল পর্যালোচনা শেষে টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক বার্তা পেয়েছেন তাসকিন। টেস্ট খেলতে তার কোনো আপত্তি নেই এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তিনি আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছেন।

এ বছর বাংলাদেশ বেশি টেস্ট ম্যাচ না খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঠাসা সূচি রয়েছে। ২০ এপ্রিল জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে শুরু হবে মৌসুম। মে মাসে পাকিস্তানে পাঁচ ম্যাচের টি২০ সিরিজ, জুন-জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফর, জুলাই-আগস্টে হোমে টি২০ সিরিজ, এরপর ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ রয়েছে। এসবের মাঝে তাসকিনকে নিজেকে ফিট রাখতে বিশ্রামের সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।

You may also like