ভারতীয় ক্রিকেটের বর্তমান সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার কাছে মর্যাদার বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি হারানোর ফলে রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও পৌঁছাতে পারেনি। এর মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) দলের মধ্যে শৃঙ্খলা, একতা ও ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখতে এবং ক্রিকেটারদের ওপর কঠোর নজর রাখতে একটি নতুন ১০ দফা নির্দেশিকা জারি করেছে।
বিসিসিআইয়ের নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে? প্রথমেই, চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার মাধ্যমে তরুণদের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে। যদি কোনো ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ান, তবে সেটি আগেই বোর্ডকে জানাতে হবে।
এছাড়া, ক্রিকেটারদের সব সময় দলের সঙ্গে থাকতে হবে। ম্যাচ এবং অনুশীলন সবার জন্য বাধ্যতামূলক। পরিবারের সদস্যদের আলাদাভাবে যাতায়াত করতে হলে কোচ অথবা নির্বাচক কমিটির প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।
ক্রিকেটাররা আর বেশি মালামাল নিয়ে সফর করতে পারবেন না। ৩০ দিনের বেশি সফরে গেলে পাঁচটি ব্যাগ নিয়ে যেতে পারবেন, যার মধ্যে দুটি খেলার সরঞ্জাম থাকবে। মোট ওজন ১৫০ কেজির বেশি হতে পারবে না। সাপোর্ট স্টাফদের জন্য তিনটি ব্যাগ এবং ৮০ কেজি ওজনের অনুমতি থাকবে। ৩০ দিনের কম সফরের জন্য চারটি ব্যাগ এবং ১২০ কেজির বেশি ওজন অনুমোদিত।
ক্রিকেটাররা নিজেদের ম্যানেজার, সহকারী, নিরাপত্তা রক্ষী বা রাঁধুনি নিয়ে সফরে যেতে পারবেন না। এর জন্য অনুমতি নিতে হবে বোর্ড থেকে। খেলার দিকে পুরো মনোযোগ দিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ক্রিকেটারদের নির্ধারিত অনুশীলনে অংশগ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং সফরের মধ্যে বিজ্ঞাপন শুট বা অন্যান্য কাজ করা যাবে না।
যতদূর বিদেশ সফর, ৪৫ দিনের সফরে ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরা দু’সপ্তাহের বেশি সময় থাকতে পারবেন না। সন্তানদের (১৮ বছরের নিচে) একবারই সফরে আসার অনুমতি থাকবে। পরিবারের খরচ বোর্ড বহন করবে, কিন্তু অতিরিক্ত সময় থাকলে খরচ ক্রিকেটারকেই দিতে হবে।
বিসিসিআইয়ের শুট এবং বিজ্ঞাপন কাজেও ক্রিকেটারদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্রিকেটারদের সেখানে থাকতে হবে, এমনকি ম্যাচ শেষ হলে ও দলের সাথে থাকতে হবে। দল কোনো বাড়তি সুবিধা প্রদান করবে না।
এই নির্দেশিকার কোনোটা লঙ্ঘন করলে, সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাকে আইপিএলসহ বিসিসিআইয়ের সব টুর্নামেন্ট থেকে নিষিদ্ধ করা হবে এবং চুক্তির অর্থ বা ম্যাচ ফি কেটে নেওয়া হবে। বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।